ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট আসার বিষয়ে প্রায়ই রোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসে। এমনকি, ডেঙ্গু আক্রান্ত নন- এমনটা ধরে নিয়েই নির্বিকার থাকছেন অসংখ্য রোগী। পরিস্থিতি খারাপ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন, তবে সবশেষ আর চিকিৎসকদেরও কিছু করার থাকছে না। বিষয়টিকে দেরিতে পরীক্ষার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে তার ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, সঠিক সময়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা না করায় ডেঙ্গুর নেগেটিভ রেজাল্টের সংখ্যা বাড়ছে। আর এই ভুল রিপোর্ট (নেগেটিভ) পেয়ে রোগী বাসায় থাকছে এবং চিকিৎসায় গুরুত্ব দিচ্ছে না। যার কারণে বাড়ছে শারীরিক জটিলতা।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে যেকোন জটিলতা এড়াতে জ্বর হওয়ার ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর উচিত। এবিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও এ পরামর্শ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবছর ডেঙ্গু পরীক্ষায় অনেকেই ডেঙ্গু নেগেটিভ বা আক্রান্ত নন বলে শনাক্ত হচ্ছে। আর সেটা ধরে নিয়েই রোগী নির্বিকার থাকছেন। ডেঙ্গুর সব উপসর্গ থাকার পরেও পরীক্ষায় ধরা না পড়ায় অনেক রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর তাতে শরীরের ভেতরে সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। শেষ সময় যখন হাসপাতালে আসতে হচ্ছে, তখন আর চিকিৎসকদের কিছু করার থাকছে না।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও তাদের লক্ষণ সব ডেঙ্গুর মতোই। সে বিবেচনা করে তারা নেগেটিভ রোগীদেরও ডেঙ্গুর ট্রিটমেন্ট প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা দিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে এ বছর সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ৬১৮ জনের। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে মৃত্যু হয়েছে ৪৫৬ জনের আর ঢাকার বাইরে মৃত্যু হয়েছে ১৬২ জনের। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৮ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছে। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৯০৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ হাজার ৭২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৯ হাজার ৫৯২ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছে ৬৮ হাজার ১০২ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৪৪ জন। ঢাকায় ৫৫ হাজার ২৩৩ এবং ঢাকার বাইরে ৬৩ হাজার ২১১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।