স্কোর: বাংলাদেশ ১৬০/৬, ওভার: ৪০ (মাহেদী হাসান ৫ , নাজমুল হোসেন শান্ত ৮৮)
ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট মিরাজ
এমনিতেই রান পাওয়া যাচ্ছিল না। তার উপর ধারাবাহিক উইকেট হারাচ্ছে বাংলাদেশ। এবার ড্রেসিংরুমের পথ ধরলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট মিরাজ। ১১ বলে ৫ রানে থেমে যায় তার ইনিংস।
পেসার রাজিথার বল মিড উইকেটে পাঠিয়েছিলেন মিরাজ। শান্ত রান নেওয়ার জন্য ডাক দিলেও মিরাজ সাড়া দেননি। তাতেই বিপদ চলে আসে। মিরাজ ক্রিজের কাছে দাঁড়িয়ে থাকেন। শান্ত তাকে পেরিয়ে ক্রিজের ভেতর ঢুকে যান। মিরাজও তাকে অনুসরণ করেন। অপরপ্রান্তে বোলার উইকেট ভাঙলে রান আউট হন মিরাজ। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান দুই বছর পর জাতীয় দলে ফেরা মাহেদী হাসান।
স্ট্যাট: ৩৫.৪ ওভার, ৫২ বল পর প্রথম বাউন্ডারি পেল বাংলাদেশ। স্পিনার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বল আলতো টোকায় মিড অন দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান শান্ত।
রান তোলায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশকে প্রবল চাপে রেখেছে শ্রীলঙ্কার বোলাররা। বাউন্ডারি তো দূরের কথা, স্ট্রাইক রোটেট করতে পারছিলেন না শান্ত ও মুশফিক। রান পেতে তাই ব্যতিক্রম কিছু করতেই হতো। সেই কাজ করতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে এলেন মুশফিক।
পেসার পাথিরানার শর্ট বল আপারকাট করতে গিয়ে থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন। জায়গায় দাঁড়িয়ে করুনারত্নে সহজেই বল তালুবন্দি করেন। মুশফিকের ২২ বলে ১৩ রানের ইনিংসটি থেমে যায় সেখানে। মুশফিককে ফেরাতে পাথিরানা ছিলেন কৌশলী। তিনটি ফুললেংথের পর শর্ট লেংথে বল দেন ডানহাতি পেসার। শেষ মুহূর্তে ব্যাট চালিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটের নিচের অংশ লাগায় টাইমিং জমেনি।
বাংলাদেশ হারাল পঞ্চম উইকেট। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ।
শতরান পেরিয়ে বাংলাদেশ
৭৮ বলে ফিফটি পাওয়া বাংলাদেশ শতরান পেরিয়েছে ১৫৪ বলে। উইকেট হারানোয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রান তোলার তেমন আগ্রাসন দেখা যায়নি। নাজমুল হোসেন শান্ত তুলনামূলক বেশি শট খেলছেন। তাওহীদ হৃদয় তাকে চতুর্থ উইকেটে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। উইকেটে শান্তর সঙ্গে এখন মুশফিক ব্যাটিং করছেন। তাদের জুটিতে বাংলাদেশ কতদূর যায় সেটি দেখার।
রিভিউ নিয়ে তাওহীদকে ফেরাল শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকার বল এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। ব্যাটসম্যানকে এগিয়ে আসতে থেকে দাসুন একটু শর্ট বল করেন। সঙ্গে স্পিন। তাতেই তাওহীদের ইনিংস শেষ। তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত করে প্যাডে। আম্পায়ারের কাছে আউটের আবেদনে সাড়া পায়নি শ্রীলঙ্কা। রিভিউ নেয় স্বাগতিকরা। তাতেই মেলে সাফল্য। ৪১ বলে ২০ রান করে তাওহীদ ফিরলেন ড্রেসিংরুমে। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
দলকে উদ্ধার করে শান্তর ফিফটি
দাসুন শানাকার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করে চার। সীমানায় ফিল্ডার চেষ্টা করেও নাগাল পাননি। ৪৭ থেকে নাজমুল হোসেন শান্তর রান পৌঁছে যায় ৫১-এ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এ বাঁহাতির এটি চতুর্থ ফিফটি। নামের পাশে একটি সেঞ্চুরিও আছে। গত এক বছরে যে ধারাবাহিকতায় আছেন এই ব্যাটসম্যান তারই প্রমাণ দিলেন। চাপের মুখে দলকে উদ্ধার করলেন ফিফটি তুলে।
শান্ত-হৃদয় জুটির ফিফটি
৩৬ রানে সাকিব আল হাসান বিদায় নেওয়ার পর জুটি বাঁধেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। চতুর্থ উইকেটে তারা দুজন দলকে বিপদমুক্ত করেন। ৭০ বলে তাদের জুটির রান পঞ্চাশ ছুঁয়েছে। এর আগে তিন ইনিংস জুটিতে তাদের রান ছিল ৮, ৫০ ও ১৫১।
বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু
১৬.১ ওভারের শুরুতে হঠাৎ বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। তবে কিছুক্ষণ পরেই বৃষ্টি থেমে গেলে আবার খেলা শুরু হয়।
বাংলাদেশের পঞ্চাশ
পাথিরানার করা ১৩তম ওভারের শেষ বল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পাঠিয়ে প্রান্ত বদল করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ব্যাট থেকে আসা ওই এক রানে বাংলাদেশের দলীয় রান পঞ্চাশ স্পর্শ করে। ধীর গতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশের ইনিংস। শান্ত ও তাওহীদের ব্যাটে রানের চাকায় গতি আসে কিনা দেখার।
সাকিবকে হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ
প্রথম পাওয়ার প্লে’তে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৪ রান তোলা বাংলাদেশ দ্বিতীয় পাওয়ার প্লে’র শুরুতেই আরেকটি উইকেট হারালো। এবার শ্রীলঙ্কা পেল দলের সবচেয়ে বড় তারকার উইকেট, সাকিব আল হাসানের।
পেসার মাথিশা পাথিরানার দ্রুতগতির বল কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সাকিব। বল তার গ্লাভসে লেগে যায় উইকেটের পেছনে। ঝাঁপিয়ে কুশল মেন্ডিস দারুণ ক্যাচ নেন। ১১ বলে ৫ রানে শেষ বাংলাদেশের অধিনায়কের ইনিংস। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান তাওহীদ হৃদয়।
উইকেট উপহার দিয়ে এলেন নাঈম
আগের ওভারে পেসার রাজিথাকে দারুণ এক কভার ড্রাইভে চার মেরে মুগ্ধ করেছিলেন নাঈম শেখ। এর আগে ইনিংসের প্রথম ওভারেও এই পেসারের বলে বাউন্ডারি হাঁকান নাঈম। উইকেটে থিতু হয়ে এক দুই রানে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এই ওপেনার। কিন্তু নিজেকে স্থির রাখতে পারলেন না। স্পিনার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বল এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে টাইমিং মিস করে পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন। সেখানে সহজ ক্যাচ নিয়ে নিশাঙ্কা ব্যাটসম্যানকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান। ২৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ রান করেন নাঈম। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
জীবন পেলেন শান্ত
পেসার রাজিথার বল আগ্রাসী মনোভাবে ড্রাইভ করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ঠিকঠাক টাইমিং মেলেনি। মিড অনে শানাকা ছিলেন প্রস্তুত। দারুণ দক্ষতায় বলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন লঙ্কান অধিনায়ক। কিন্তু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বল হাতে জমিয়ে রাখতে পারেননি। তাতে ২ রানে জীবন পান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
স্ট্যাট: বাংলাদেশের ১৬তম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হলেন তানজিদ হাসান তামিম। ওপেনার হিসেবে চতুর্থ। আগের তিন ওপেনার ছিলেন নুরুল আবেদীন, হারুনুর রশিদ ও রফিকুল খান।
শূন্যে শুরু তানজিদের
অভিষেক রাঙাতে পারলেন না তানজিদ হাসান তামিম। রানের খাতা খোলার আগেই আউট বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ওভারে স্পিনার মহেশ থিকসানাকে বোলিংয়ে এনে চমকে দেন লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা।
নিজের দ্বিতীয় বলে থিকসানা পেয়ে যান সাফল্য। এলবিডব্লিউ করে ফেরান তানজিদকে। উইকেটের উপরের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি তানজিদ। আম্পায়ার আঙুল তুলতে সময় নেননি। রিভিউও চায়নি বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম বলেও ব্যাট চালাতে গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। তাতে শূন্য রানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হলো এই ওপেনারের।
ওই ওভারের শেষ বলে নাজমুল হোসেন শান্তর আউটের আবেদন করে ব্যর্থ হয়ে রিভিউ চায় শ্রীলঙ্কা। রিপ্লেতেও ফল পাল্টায়নি। বল আউটসাইড অফ থাকায় রিভিউ কাজে আসেনি।
অপরপ্রান্তে থাকা নাঈম শেখ বাউন্ডারিতে রানের খাতা খোলেন। প্রথম ওভারে পেসার রাজিথার ওভারপিচ বল ড্রাইভ করে বাউন্ডারিতে পাঠান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, অভিষেক তানজিদের
টস: টস জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সাড়ে তিনটায় ম্যাচটি শুরু হবে।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান, নাঈম শেখ, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
তানজিদের অভিষেক, তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের ১৪৩ নম্বর ওয়ানডে ক্যাপ পেলেন তানজিদ হাসান তামিম। তামিম ইকবাল চোটে থাকায় তানজিদের সুযোগ মেলে স্কোয়াডে। এবার একাদশেও সুযোগ হয়ে গেল তার। প্রতিশ্রুতিশীল এই ওপেনারের থেকে অনেক প্রত্যাশা টিম ম্যানেজমেন্টের। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সামর্থ্য আছে বলে যুব বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এবার বড় মঞ্চে বাঁহাতি ওপেনারের প্রমাণের পালা।
এদিকে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছেন সাকিব। শরিফুল, তাসকিন ও মোস্তাফিজ পেস আক্রমণ সামলাবেন। সাকিবের সঙ্গে আছেন মিরাজ ও মাহেদী।
উইকেটে বড় রান প্রত্যাশা করছেন সাকিব। ড্রাই উইকেট। তাই পেসারদের সঙ্গে স্পিনাররাও সুবিধা পাবে বলে বিশ্বাস তার। শানাকাও টস জিতলে ব্যাটিং নেওয়ার কথা বলেছেন।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দাসুন শানাকা, পাথুম নিসাঙ্কা, দিমুথ করুণারত্নে, কুশল মেন্ডিস, চারিথ আসালঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, সাদিরা সামরাবিক্রমা, মহেশ থিকসানা, দুনিথ ওয়েলালাগে, মাথিশা পাথিরানা ও কাসুন রাজিথা।
বাংলাদেশের সামনে চোট-জর্জরিত শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কা মাঠে নামতে পারছে এটাই মনে হয় যথেষ্ট! নাকি? যেভাবে একের পর এক তাদের ক্রিকেটার চোটে পড়েছেন তাতে কার জায়গায় কাকে নেবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তাইতো শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রতিযোগিতা শুরুর একদিন আগে নিজেদের দল ঘোষণা করে লঙ্কানরা।
চোটের কারণে শ্রীলঙ্কা দলে নেই মূল তিন পেসার দুশমান্তা চামিরা, দিলশান মাদুশঙ্কা ও লাহিরু কুমারা। এছাড়াও দলে নেই শ্রীলঙ্কার তারকা লেগস্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ফলে মূল একাদশের চার নিয়মিত ক্রিকেটারদের ছাড়াই অতিথিদের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে।
বাংলাদেশ দলেও সমস্যা রয়েছে। এই টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই চোটের কারণে তামিম ইকবাল নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। ছিটকে গেছেন লিটন দাস। বাংলাদেশ হারিয়েছে ইবাদত হোসেনকেও। ফলে দুই দল সমান অবস্থায় আছে বললেও ভুল হবে না।
হেড টু হেড
ওয়ানডেতে দুই দল এর আগে ৫১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে শ্রীলঙ্কার ৪০ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় কেবল ৯টি। ফল আসেনি ২ ম্যাচে। দুই দল সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল ২০২১ সালে। তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
সাকিবের নতুন পথ চলা
ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবাল দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পর বিসিবি সাকিবের কাঁধে নেতৃত্বভার দিয়েছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজার ইনজুরিতে ২০০৯ সালে দায়িত্ব পান সাকিব। এরপর ২০১১ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় বিসিবি।
মাশরাফি ২০১৪ সালে পুনরায় দায়িত্ব পেলে সাকিবকে করা হয় সহ অধিনায়ক। এরপর মাশরাফির অনুপস্থিতিতে তিনটি ম্যাচে ভারতপ্রান্ত অধিনায়ক হিসেবে সাকিব দলকে নেতৃত্ব দেন। এবার পাকাপাকিভাবে নতুন পথ চলা শুরু হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের ধ্রুবতারার। এর আগে তার নেতৃত্বে ৫০ ম্যাচ খেলে ২৩টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ২৬টি। এবার তার সফর কেমন হয় সেটাই দেখার অপেক্ষা।