রাজনৈতিক কারণে আইসিসি ইভেন্ট বা এশিয়া কাপ ছাড়া দেখা হয় না ভারত ও পাকিস্তানের। এশিয়া কাপের ফরম্যাটের কল্যাণে দুবার দেখা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুদেশের মধ্যে ক্রিকেট লড়াই দেখার সুযোগ ছিল। তবে ২ সেপ্টেম্বর পাল্লাকেলেতে গ্রুপ পর্বে দুদলের প্রথম লড়াইটি ম্যাচটি ভেসে যায়। সুপার ফোরের লড়াইটিও বৃষ্টির শঙ্কায় পড়েছে। কিন্তু এমন একটি লড়াই যা না হলে যে আয়োজক-ব্রডকাস্টারদের পয়সা কামাই হয় না। তাই ব্যতিক্রম উদ্যোগে শুধু এ ম্যাচটির জন্যই রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। আজ কলম্বোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ। তাই দুদিন মিলে যদি ভারত-পাকিস্তান মুখরোচক লড়াইটা হয় এই চেষ্টা চলছে।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে কয়েকবার বৃষ্টির বাধা সত্ত্বেও পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। যদিও তারা ৪৮.৫ ওভারেই গুটিয়ে যায় ২৬৬ রানে। পাকিস্তানি তিন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ ও নাসিম শাহকে হয়তো ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেননি রোহিত, কোহলি, গিলরা। রোহিত আউট হন শাহিন আফ্রিদির ইনসুইংয়ে। বাঁহাতি পেসারদের সামনে রোহিতের মতো দুর্বলতা আছে কোহলিরও। ওয়ানডেতে ২০২১ সালের পর থেকে বাঁহাতি পেসারদের বিপক্ষে রোহিতের গড় ২৩, আউট হয়েছেন ছয় বার। কোহলির গড় ২১.৭৫। এই সময়ে কোহলি বাঁ-হাতিদের বিরুদ্ধে আউট হয়েছেন চারবার।
পাকিস্তানি বোলিং আক্রমণের সামনে অলআউট হওয়ার কারণ গিল মনে করছেন, নিয়মিত না খেলা। ‘যখনই আমরা নতুন বোলারকে মোকাবিলা করি, তারা পার্থক্য গড়ে দেয়। আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলি না, তাদের বোলারদের খেলতে আমরা অভ্যস্ত নই। শাহিনের (আফ্রিদি) অনেক সুইং আছে, নাসিমের আছে পেস আর মুভমেন্ট এবং তারা উইকেট থেকেও সুবিধা আদায় করে নেয়। ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে তারা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে গিলের প্রথম ম্যাচ ছিল এবার এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের খেলাটি। সেই ম্যাচে গিল ৩২ বল খেলে ১০ রান করে ফেরেন। তবে সবশেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে অপরাজিত ৬৭ রান করেন। তবু গিলকে কথা বলতে হয়েছে নিজের ফর্ম নিয়ে। ‘মাঝেমধ্যে টেকনিক্যাল কারণেই রানখরা হয় না, বোলাররা খুব ভালো করলেও হয়। আপনার প্রক্রিয়ার ওপর ভরসা রাখতে হবে। দলে নিজের ভূমিকা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। ওপেনারদের শুরুটা ভালো করতে হবে, শুরু থেকেই আধিপত্য করতে হবে।’
পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম তার পেস আক্রমণ সম্পর্কে প্রতিপক্ষদের সতর্ক করে দিয়েছেন। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাবর বলেন, ‘ফাস্ট বোলাররাই ম্যাচ এবং টুর্নামেন্ট জেতে, আমি বিশ্বাস করি।’ ম্যাচ শ্রীলঙ্কাতে হলেও ভারতের চেয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখছেন বাবর। ‘আমরা যেহেতু এখানে টানা ক্রিকেট খেলেছি, তাই আপনি বলতেই পারেন আমরা এগিয়ে বা আমরাই সুবিধা পাব। টেস্ট সিরিজ, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ, আফগানিস্তান সিরিজ আর এশিয়া কাপ মিলিয়ে এখানে আমরা প্রায় আড়াই মাস ধরে।’
ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে তিন পেসার খেলিয়েছে পাকিস্তান। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান খেলিয়েছে চার পেসার।
ভারতের পেস লাইনের প্রতিভূ জাসপ্রিত বুমরাহ ব্যক্তিগত কারণে দেশে গেলেও আবার ফিরেছেন দলে। আজ তাকে নিয়েই মাঠে নামবে ভারত। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির বাধা এড়িয়ে ম্যাচ মাঠে গড়ালে পাকিস্তানের পেস বনাম ভারতের তারকাসমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনের লড়াইটা দেখার সুযোগ পাবে ক্রিকেট বিশ্ব।