‘বাজারে এলে কিছুই কিনে শান্তি পাইনা। সব কিছুতেই আগুন জ্বলা দাম! যে জিনিস কিনতে যাই, সেটারই দাম বেড়ে যায়। যে বাজেট নিয়ে বের হই, তা দিয়ে আর সবকিছু কেনা হয় না। বাজারে এলেই তো ঘাম ছুটে যায়। এভাবে কী চলা যায়?’ এভাবেই আক্ষেপের সুরে ক্রমশ দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির বর্ণনা দিচ্ছিলেন সৈয়দ আব্দুল হাকিম।
প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির এমন অভিযোগ শুধু আব্দুল হাকিমের নয়, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সাইফেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো মানুষদের কিছুই কিনে খাবার উপায় নেই।’
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাসাবো মাদারটেক কাঁচাবাজার ও খিলগাঁও মাছ বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। কিছুদিন আগে ৩২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হওয়া রুই মাছ কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা বাড়িয়ে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, ভরা মৌসুমেও মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা কেজিদরে। বড় সাইজের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে শুরু করে ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত, তবে ছোট সাইজের কিছু ৮০০ টাকা কেজিদরে পাওয়া যাচ্ছে। কেজিপ্রতি ৪০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে বাটা মাছ।
গত সপ্তাহেও এ মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। বড় সাইজের ট্যাংরা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা দরে। তবে মানভেদে এ মাছ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া ছোট পুঁটিমাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে, ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে মলা মাছ। তবে ভালো মানের কোনো ছোট মাছই ৫০০ টাকা কেজিদরের নিচে মিলছে না।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার কেজিপ্রতি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে অবশ্য ১৭০ টাকা কেজিদরে ব্রয়লার পাওয়া গেছে। অপদিকে, রোস্টের মুরগি কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মাছের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে মাছ ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, ‘মাছের দাম তো একরকম থাকে না। দাম বাড়ে কমে। আমরা আড়ত থেকে যে দামে কিনি, তার থেকে অল্প কিছু লাভে বিক্রি করি। এখানে আমাদের তো কিছুই করার নেই।’
অপর এক মাছ বিক্রেতা তুহিন বলেন, ‘সব জিনিসের দাম বাড়ছে। তাই মাছের দামও বাড়ছে। আমরা তো আর দাম ঠিক করে দেই না। আমরা কমে কিনতে পারলে কম দামেই বিক্রি করব।’