ভারতের মণিপুরে প্রায় দুই দশক পরে বলিউড বিদ্বেষের ধারা ভাঙল। ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রদর্শন হলো হিন্দি সিনেমা।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় চুরাচাঁদপুর জেলার রেংকাই লামকা এলাকায় একটি হিন্দি সিনেমার প্রদর্শনের আয়োজন করে জনজাতি সংগঠন ‘হামার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (এইচএসএ)।
এ ব্যাপারে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, মঙ্গলবার ভারতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হচ্ছে এবং এই দিনেই জাতিগত সহিংসতায় বিপর্যস্ত মণিপুরে দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো হিন্দি সিনেমা প্রদর্শিত হবে। এদিন সন্ধ্যায় মণিপুরের চুরাচাঁদপুরের রেংকাই (লামকা) এলাকায় একটি হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পরিকল্পনা করে উপজাতীয় সংগঠন হামার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এইচএসএ)। তবে সিনেমাটির নাম প্রকাশ করেনি তারা।
জাতিগত দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুরে জনজাতি সংগঠন এইচএসএ-র এই উদ্যোগ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
এর আগে, সোমবার (১৪ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এইচএসএ জানায়, দেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রকাশ্যে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শন করবে তারা। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর’ প্রতি আমাদের দৃঢ়তা এবং অটল মনোভাব প্রদর্শনের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব গোষ্ঠী কয়েক দশক ধরে আদিবাসীদের পরাধীন করে রেখেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে শেষবার মণিপুরে বলিউড সিনেমা ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ প্রদর্শিত হয়েছিল। এর কিছুদিন পর থেকেই জঙ্গি সংগঠনগুলোর হুমকি ও সামাজিক সংগঠনগুলোর মদতে মণিপুরে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শন কমতে শুরু করে।
২০০০ সালের অক্টোবরে ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি অফ মণিপুর’সহ বেশ কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠী এবং সামাজিক সংগঠন হিন্দি সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর ভারতীয় সিনেমার ‘আগ্রাসন’ রুখতে ধাপে ধাপে প্রেক্ষাগৃহ ও কেবল চ্যানেলে হিন্দি সিনেমা দেখানো গায়ের জোরে বন্ধ করা হয়। পরে দফায় দফায় হাজার হাজার সিডি ‘বাজেয়াপ্ত’ করে আন্দোলনকারীরা। মূলত সে সময় থেকেই মণিপুরের কোথাও হিন্দি সিনেমার প্রদর্শন হতো না। খোলাখুলি বিক্রি হতো না হিন্দি সিনেমার সিডি।