মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন

সামাজিক সম্প্রীতি নষ্টের দায়ে টিকটক নিষিদ্ধ করছে নেপাল

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ৬:৩১ am

ভিডিওভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক নিষিদ্ধ করছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল। দেশটি বলছে, জনপ্রিয় এই ভিডিও-শেয়ারিং অ্যাপের ‘অপব্যবহারে’ সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে এবং সহযোগিতামূলক অনুভূতি বিঘ্নিত হচ্ছে।

এছাড়া টিকটক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্রমবর্ধমান দাবি রয়েছে বলেও জানিয়েছে নেপাল। সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রেখা শর্মা জানিয়েছেন, সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে টিকটক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শর্মা বলেন, ধারাবাহিকভাবে ‘সামাজিক সম্প্রীতিকে বিঘ্নিত করে এবং পারিবারিক কাঠামো ও সামাজিক সম্পর্ককে ব্যাহত করে’ এমন কন্টেন্ট শেয়ারের জন্য টিকটকের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহৃত হওয়ায় এটি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে ঠিক কী কারণে এই নিষেধাজ্ঞার সূত্রপাত হয়েছে তা উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘সহকর্মীরা প্রযুক্তিগতভাবে টিকটক বন্ধ করার জন্য কাজ করছেন।’

আল জাজিরা বলছে, বিশ্বের বহু দেশেই টিকটক ইতোমধ্যেই আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক দেশই আবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, নেপালে গত চার বছরে ১৬০০ টিরও বেশি টিকটক-সংক্রান্ত সাইবার ক্রাইম মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

নেপাল টেলিকম অথরিটির প্রধান পুরুষোত্তম খানাল বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের অ্যাপটি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে খানাল বলেছেন, ‘কয়েক জায়গায় ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে, আর অন্যরা সোমবার রাতে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে।’

টিকটক অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে এই বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধে সাড়া দেয়নি। তবে জনপ্রিয় এই ভিডিও-শেয়ারিং অ্যাপটি আগে বলেছে, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘বিপথগামী’ এবং ‘ভুল ধারণার’ ওপর ভিত্তি করে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নেপালের বিরোধী নেতারা অ্যাপ নিষিদ্ধের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, এতে ‘কার্যকারিতা, পরিপক্কতা এবং দায়িত্বশীলতার’ অভাব রয়েছে।

নেপালের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির সিনিয়র নেতা প্রদীপ গাওয়ালি বলেছেন, ‘অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেক অবাঞ্ছিত কন্টেন্ট রয়েছে। যা করতে হবে তা হলো- এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা। সীমাবদ্ধ করে দেওয়া নয়।’

এছাড়া ক্ষমতাসীন জোটের অংশ নেপালি কংগ্রেস পার্টির নেতা গগন থাপা বলেছেন, সরকারের উদ্দেশ্য মনে হচ্ছে ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রোধ করা’। তার দাবি, ‘যারা সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করে তাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য রেগুলেশন প্রয়োজন, কিন্তু রেগুলেশনের নামে সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করা সম্পূর্ণ ভুল।’

আল জাজিরা বলছে, নেপালের প্রতিবেশী দেশ ভারত চীনা মালিকানাধীন অন্যান্য কয়েক ডজন অ্যাপসহ ২০২০ সালের জুন মাসে টিকটকও নিষিদ্ধ করেছিল। সেসময় ভারত দাবি করেছিল, এসব অ্যাপ জাতীয় নিরাপত্তা এবং অখণ্ডতার জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

অন্যদিকে টিকটকের কন্টেন্টকে ‘অনৈতিক এবং অশ্লীল’ বলে অভিহিত করে অ্যাপটিকে কমপক্ষে চারবার নিষিদ্ধ করেছে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD