রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১২ অপরাহ্ন

লোকসভা ভোটের আগে ফ্রিজ হলো কংগ্রেসের চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১১:৪০ am

ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে হটাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সরাসরি অংশগ্রহণে ‘ইন্ডিয়া জোট’ গঠনের পর থেকেই ঘুম ছুটেছে গেরুয়া শিবিরে। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেসকে কব্জা করতে বিভিন্ন পথে হেটেছে মোদির দল।

এবার কংগ্রেসের ঘাড়ে নেমে আসা—২১০ কোটি টাকার জরিমানা অপরাজনীতির অংশ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নেতারা। এই জরিমানার আওতায় লোকসভা ভোটের আগে ফ্রিজ করা হয়েছে কংগ্রেসের চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আয়কর দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী কারো নিকট থেকে দুই হাজার টাকা বা তার বেশি নগদ অনুদান নিতে পারে না রাজনৈতিক দলগুলো। গত লোকসভা ভোটের আগে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সেই নিয়ম ভেঙে নগদে নেওয়া হয়েছিল ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। দলের এমপিরাই সেই অর্থ দিয়েছিলেন। এছাড়া সেই অর্থবর্ষের ট্যাক্স রিটার্ন জমা করা হয়েছিল নির্ধারিত সময়ের (৩১ ডিসেম্বর, ২০২০) ৪০-৪৫ দিন পর। এই দুই ‘অপরাধে’ কংগ্রেসের ঘাড়ে নেমে এসেছে২১০ কোটি টাকার জরিমানা।

কংগ্রেস দাবি করছে, জরিমানার ১৩৫ কোটি ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা সরাসরি দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আদায়ের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি ৭৫ কোটি ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ১৫ টাকা ৭৩ পয়সা বকেয়ার নোটিশ গেছে যুব কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট থাকা ব্যাংকে। এতে ফ্রিজ হয়েছে কংগ্রেসের চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

এদিকে চার বছর আগের অনিয়ম নিয়ে লোকসভা ভোটের ঠিক আগে হঠাৎ কেন মাঠে নামল আয়কর দপ্তর? এমন প্রশ্ন তুলে এই পদক্ষেপকে মোদি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেই দাবি করেছে কংগ্রেস।

অপরদিকে গতকাল শুক্রবার আয়কর সংক্রান্ত আদালত ‘ইনকাম ট্যাক্স অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল’ (আইটিএটি)-এর দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। পরে আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানায়, কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১৫ কোটি টাকা রাখতেই হবে। বাকি টাকা তোলা যাবে। তবে এতে আয়কর দপ্তরের অনুমতি লাগবে।

এছাড়া এ নিয়ে আগামী বুধবার বিস্তারিত শুনানি হবে বলেও জানা গেছে।

এদিকে ভোটের আগে দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তালা লাগায় ক্ষোভে ফুঁসছে কংগ্রেস নেতাকর্মীরা।

এ নিয়ে কংগ্রেসের অন্যতম নেতা রাহুল গান্ধী এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘ভয় পাবেন না মোদিজি। কংগ্রেস অর্থবলে চলে না। জনতাই আমাদের শক্তি। যত বাধাই আসুক, স্বৈরাচারী সরকারের কাছে মাথা নত করিনি। করবো না।’

দলের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘তবে কি নরেন্দ্র মোদি চাইছেন, দেশে একটিই রাজনৈতিক দল থাকবে?’

বেনজিরভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করাকে গণতন্ত্রের উপর আঘাত বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দলের খরচ জোগাড় করতে কংগ্রেস চাঁদা তোলা শুরু করেছে। যুব কংগ্রেসও তার সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমেছে। উঠেছে ২৫ কোটি টাকা। অথচ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখতেই হবে কমপক্ষে ১১৫ কোটি টাকা। আমাদের এত টাকাই নেই। তার মানেই হল, আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ।’

অপরদিকে আয়কর দপ্তরের দাবি, এটা রুটিন প্রক্রিয়া। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং লেনদেনে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।

রাজনৈতিক মহলের মতে, আইটিএটি-র শুনানির পরেই নরম হয়েছে আয়কর দপ্তর।

এদিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা মোদি বিরোধীতার পালে হাওয়া দিচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে খুঁটি শক্ত করতে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় মাঠে রয়েছেন রাহুল গান্ধী।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD