পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখেই বাড়তে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত বছরের রমজানে ব্রয়লার মুরগির দাম আড়াই শ টাকা ছাড়িয়ে ছিল। বর্তমানে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকা করে। গত বছরের তুলনায় দাম এখনও কিছুটা কম রয়েছে। তবে গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
গত রমজানের আগে দাম বেশি বেড়ে যাওয়ায় মুরগি উৎপাদনকারী বড় চার প্রতিষ্ঠানকে ডেকে মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এরপর বাজারে মুরগির দাম কমেছিল। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, গতবারের মতো এবারও যাতে রোজা ও শবে বরাতের আগে বাজারে অস্থিরতা তৈরি না হয়, সে জন্য কর্তৃপক্ষের তদারক করা প্রয়োজন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ফার্মের মুরগির উৎপাদন হয়েছিল ৩১ কোটি ৯৭ লাখ। সরকারের হিসাবে গত ১০ অর্থবছরে মুরগির উৎপাদন ক্রমেই বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়ার আগপর্যন্ত দেশের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম মোটামুটি ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। এরপর থেকে মুরগির বাজার ওঠানামার মধ্যে আছে। কখনও খামারিরা লোকসান করছেন, আবার কখনও ক্রেতাদের বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে।
মাস দেড় আগেও কমবেশি ৭০ টাকায় প্রতিটি ব্রয়লারের বাচ্চা বিক্রি হয়েছে। ব্রয়লারের বাচ্চার দাম সাধারণত ৩০ টাকার মতো থাকে। দাম বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা খামারে নতুন করে বাচ্চা তোলা কমিয়ে দিয়েছেন। আর এ কারণেই এখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। এর ফলে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
খামারি শাহিন আলম বলেন, বর্তমানে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা। দুই হাজার পিস বাচ্চা কিনতে চাইলে এক হাজার পাওয়া যাচ্ছে। আর বাচ্চাগুলো কোম্পানিগুলোর নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম ৭০ থেকে ৭৫ টাকাও পড়ছে কখনও কখনও। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, হঠাৎ করেই মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাংস ও ডিমের দাম বাড়লেই সাধারণ মানুষ কথা বলে। বাজারে দাম নিয়ে হইচই হয়। তবে ৩০ টাকার মুরগির বাচ্চা ৮০ টাকায় বিক্রি করলে তখন কেউ কথা বলে না। কারণ অনেকেই বিষয়টি জানেন না।
তিনি বলেন, কম দামে ডিম ও মুরগির মাংস খেতে সবারই প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু খামারির খরচ যে বাড়ল, তা দেখার কেউ নেই। মুরগি-ডিমের বাজারে অস্থিরতা কমাতে হলে মুরগির খাদ্য ও বাচ্চার দাম স্থিতিশীল রাখা দরকার।