শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন

যে দাবি পূরণ না হলে শস্যচুক্তি নবায়ন করবেন না পুতিন

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৭:০২ am

দাবি পূরণ না হলে রাশিয়া শস্যচুক্তি নবায়ন করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া শস্যচুক্তি নবায়ন করতে প্রস্তুত তবে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার দাবিপূরণ না করা পর্যন্ত মস্কো এই চুক্তি কার্যকর করবে না।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেনীয় শস্য নিরাপদে রপ্তানির বিষয়ে পুতিন তার এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। খবর আলজাজিরার।

পুতিন বলেন, আমরা শস্যচুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে বিবেচনা করার জন্য প্রস্তুত। রুশ কৃষি রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে এই চুক্তি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী রাশিয়ার সোচি শহরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ায় বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে পরিচিত শস্য চুক্তিটিকে পুনরুজ্জীবিত করার আশায় এই বৈঠকের আয়োজন করা হলেও নিজেদের দাবি পূরণের বিষয়ে পুতিন তার দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন।

এদিন মূলত ভ্লাদিমির পুতিন তার কৃষি রপ্তানির বিষয়ে মস্কোর দাবি পশ্চিমা দেশগুলো পূরণ করার পরেই কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনীয় শস্য নিরাপদে পাঠানোর বিষয়ে জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তি পুনঃস্থাপনের বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর ইউক্রেনে সেনা পাঠিয়ে দেশটির কৃষ্ণসাগরের জাহাজ চলাচল পথ ও বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় মস্কো। এতে করে ইউক্রেনের উৎপাদিত শস্য বন্দরে আটকে যায়। মূলত কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার অবরোধের কারণে ইউক্রেনের বন্দরে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত থাকা কোটি কোটি টন খাদ্যশস্য আটকা পড়ে ছিল।

এতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম দ্রুত হারে বাড়তে থাকে যার ফলে দরিদ্র দেশগুলোয় খাদ্য সঙ্কট দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি স্বাভাবিক করতে গত বছরের ২২ জুলাই রাশিয়া–ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। যা কার্যকর হয় গত বছরের আগস্ট মাসের শুরু থেকে।

চুক্তির মধ্যস্থতায় ছিল জাতিসংঘ ও তুরস্ক। ওই চুক্তির ফলে রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে তাদের অবরোধ শিথিল করে যাতে ইউক্রেন থেকে সমুদ্রপথের নিরাপদ করিডর দিয়ে খাদ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারে। এতে করে আগস্ট থেকেই ইউক্রেনের তিনটি বন্দর থেকে বাকি বিশ্বে নিরাপদে খাদ্যশস্য রপ্তানির পথ খুলে যায়।

মূলত যুদ্ধ সত্ত্বেও বৈশ্বিক খাদ্য সংকট দূর করতে ইউক্রেনকে তার কৃষ্ণসাগর বন্দরগুলো থেকে শস্য রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল রাশিয়া। তবে এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য রাশিয়ার শর্ত উপেক্ষা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে মস্কো গত জুলাই মাসে সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়।

রাশিয়ার অভিযোগ, রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা রক্ষা করা হয়নি। দেশটির দাবি, জাহাজ চলাচল ও বীমার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ তার কৃষি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করেছে। যদিও গত বছর থেকে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড পরিমাণ গম প্রেরণ করেছে মস্কো।

সোমবারের বৈঠকে পুতিন মূলত সেই অভিযোগগুলোই পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন, কৃষ্ণসাগর করিডোরকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যদি এই প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষা করা হয় তবে রাশিয়া ‘কিছু দিনের মধ্যে’ চুক্তিতে ফিরে আসতে পারে।

অন্যদিকে এই বিষয়ে শিগগিরই একটি অগ্রগতি আসতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তিনি বলেন, তুরস্ক এবং জাতিসংঘ এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নতুন প্যাকেজ প্রস্তাব নিয়ে একসাথে কাজ করছে।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD