বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির বিষয়ে আমাদের কিছু করণীয় নেই। কোনো বক্তব্যও নেই। কারণ এটা সরকারের বিষয়। ভিসানীতির কারণে না, দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা বলেছি, সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন করতে চাই। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাচন অফিস কর্তৃক আয়োজিত উপজেলা হলরুমে উপজেলার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম প্রধান, গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচ এম কামরুল হাসান, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘আগামী নভেম্বরের প্রথম দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। আমাদের অন্যতম দুটি দায়িত্বের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আমরা ইতোমধ্যে করে ফেলেছি। জাতীয় নির্বাচন জানুয়ারি মাসের ২৯ তারিখের মধ্যে করতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যথাসময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করব। জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।’
বিএনপি নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে কি-না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রেখেছি, সবাইকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য। রাজনৈতিক বিষয় রাজনৈতিক মাঠেই সমাধান হবে, এটা আমাদের কিছুই বলার নেই। আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা, জাতির প্রত্যাশা।’
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সবসময়ই স্বাগত জানায়, যখন ইচ্ছা উনারা যদি মনে করেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন, আমরা তখনই কথা বলতে রাজি। আমাদের পক্ষ থেকে এই মুহূর্তে তাদের ডেকে সংলাপ করার মতো সময় নেই। আমাদের এক দিন কমছে কাজ বাড়ছে। যেকোনো রাজনৈতিক দল যদি মনে করে— আমাদের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন আছে; রাত, দিন, সকাল যখন তারা মনে করবে, তখনই আমাদের কাছে আসতে পারে। আলোচনার জন্য আসতে পারে। সংলাপ মানে বৈঠকী সংলাপ হবে না। আমাদের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় আছে, আমরা সংবিধানের মধ্যে আছি, সংবিধানের মধ্যেই নির্বাচন করব।’
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল দেবো। এবার একটু দীর্ঘ সময় নিয়ে তফসিল দিতে চাই। এতে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত অনেক কাজ তাড়াহুড়ো করে করতে হয়। গত নির্বাচনের রাতে ব্যালট পাঠানোর কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। যার কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুর্গম এলাকা ছাড়া কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট সকালে পাঠানো হবে। দুর্গম এলাকা, চরাঞ্চল, দ্বীপাঞ্চলে নিবাচনের সরঞ্জাম আগের রাতে নিরাপত্তা দিয়ে পাঠানো হবে।’