শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৭ অপরাহ্ন

বিশ্বজুড়ে ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম’ সঠিক ব্যবহারের আহ্বান বাংলা‌দেশের

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৭:২৫ am

বিশ্বজুড়ে শান্তির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম’ এর সঠিক ব্যবহারের আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ।

নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় বৃহস্প‌তিবার (৩১ আগস্ট) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ক বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশীপ রেজুল্যুশনের উপর অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের ফোরামে এ আহ্বান জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

স্থায়ী প্রতি‌নি‌ধি ব‌লেন, বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রচার ও বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুতে সুস্থ বিতর্ক উৎসাহিত করার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দেশ, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মধ্যে শান্তির সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ডিজিটাল মিডিয়ার শক্তিকে কাজে লাগাতে পারি।

স্থায়ী মিশন জানায়, সভাটি আহ্বান করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসি। উদ্বোধনী অধিবেশনে আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল ফর পলিসি, ইউনেস্কোর নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক এবং আইটিইউ-এর জাতিসংঘ বিষয়ক প্রধানসহ অনেক উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য দেন।

পরে ‘ডিজিটাল যুগে শান্তির সংস্কৃতির প্রচার’ থিমের অধীনে একটি প্যানেলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আলেয়া আহমেদ সাইফ আল-থানি। এতে সদস্য রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রযুক্তি দূত, শান্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর এবং গুগলের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন।

শান্তির সংস্কৃতির প্রচারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন সাধারণ পরিষদের সভাপতি। তি‌নি ব‌লেন, ডিজিটাল যুগে শান্তির সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অনলাইন ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। যা সম্মান ও সহনশীলতাকে উৎসাহিত করবে, ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং বৈষম্যের মোকাবিলা করবে এবং নতুন প্রযুক্তির অপব্যবহারের ঝুঁকি মোকাবিলা করবে।

রাষ্ট্রদূত মুহিত তার স্বাগত বক্তব্যে চলমান বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শান্তির সংস্কৃতি লালন করার অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতার ওপর জোর দেন।

রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন জ্ঞানরাজ্যে আমাদের অভূতপূর্ব প্রবেশাধিকার দিয়েছে এবং অবারিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে, তেমনি এটি বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, অসহিষ্ণু এবং বিভাজনমূলক আখ্যানের একটি স্রোতও উন্মোচন করেছে।

তিনি মিয়ানমার থেকে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের উৎখাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, এসময়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যপকভাবে ব্যহার করা হয়েছিল। এই পটভূমিতে তিনি ডিজিটাল প্লাটফর্মে বিশেষ করে তরুণদের জন্য সাবধানতা অবলম্বনের উপর জোর দেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এমন সাবধানতার অভাব সারাবিশ্বে আমাদের সম্প্রীতি অর্জনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বিপন্ন করে দিতে পারে।

শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টার উপর ডিজিটাল বিভাজনের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সবার ন্যায়সঙ্গত প্রবেশিধাকার নিশ্চিত করার এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরতার ওপর জোর দেন। তিনি টেকসই উন্নয়ন ও শান্তির জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি ও সমাজের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রাষ্ট্রদূত অনলাইনে নারী ও মেয়েদের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন এবং সবার জন্য একটি নিরাপদ এবং প্রবেশযোগ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জেন্ডার ডিজিটাল বিভাজন দূরীকরণের আহ্বান জানান।

অবশেষে ডিজিটাল প্লাটফর্মের সম্ভাব্য অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার পাশাপাশি শান্তি-নির্মাণের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।

সভায় বিপুল সদস্যরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, আন্তঃসরকারি সংস্থা এবং সুশীলসমাজের প্রতিনিধিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। তারা সবাই শান্তির সংস্কৃতি প্রচারে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD