সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০২ অপরাহ্ন

প্রতারণা করে ব্যবসায়ীর অর্থআত্মসাৎ, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১:৩৫ pm

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ৫৫ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মোঃ জামাল হোসেনের (৫০) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকী-আল-ফারাবী -এর আদালত এই পরোয়ানা ইস্যু করেন। মোঃ জামাল হোসেনের অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণা করায় দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগীর আইনজীবী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মোঃ জামাল হোসেন বি-বাড়িয়া জেলা বাঞ্ছারামপুর থানা খাগকান্দা গ্রামের হাজী মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল এর সন্তান। বর্তমানে তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি ব্লকে (বাসা নং-২৫৯) আলহাজ্ব আব্দুস সোবহান সড়কের বসবাস করেন।

ভুক্তভোগী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, আসামি মোঃ জামাল হোসেন ২ কাঠা জমি বিক্রির কথা বলে তার কাছ থেকে ৫৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ সংক্রান্ত বায়নাপত্রও হয়েছে। টাকা নেয়ার সব প্রমাণাদিও তার কাছে রয়েছে। কিন্তু টাকা নেয়ার পর তিনি জমি দলিল না দিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন। টাকা ফেরত অথবা জমি দলিল দেয়ার অনুরোধ করেন শফিকুল। এ নিয়ে জামাল হোসেনের সঙ্গে একাধিবার বৈঠকও করেন শফিকুল ইসলাম। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান। শফিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে টাকা দিয়েছেন, এখন জমি-টাকা কোনোটাই পাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে, মোঃ জামাল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি, পরবর্তীতে কল ব্যাক করে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর পরে কথা বলবেন জানিয়ে কল কেটে দেন।

মামলার এজাহারে জানা যায়, আসামি মোঃ জামাল হোসেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ২ কাঠা জমি বিক্রির জন্য ভুক্তভোগী মোঃ শফিকুল ইসলামের সঙ্গে গত ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর তারিখে স্ট্যাম্পে বায়নানামা দলিল করেন। জমির মূল্য কাঠা প্রতি ৫৫ লাখ টাকা হিসাবে ২ কাঠার মোট মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং মোঃ জামাল হোসেন বায়না বাবদ বিভিন্ন তারিখে নগদ টাকা/ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ৫৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। টাকা নিয়ে জমির মূল এলোটমেন্ট লেটার, মূল দলিল ভুক্তভোগীর নিকট হস্তান্তর করেন এবং বাদীকে কিছুদিন ধৈর্য ধরার জন্য বলেন। আসামি মোঃ জামাল হোসেন কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে দলিল রেজিস্ট্রি পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করতে থাকেন। ইতোমধ্যে জমির মূল্য বৃদ্ধি পাইলে আসামি মোঃ জামাল হোসেন দলিল রেজিস্ট্রী করে না দিয়ে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৬ জুন তারিখে আসামি মোঃ জামাল হোসেন প্রত্যক্ষ সাক্ষী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির সহায়তায় বাদীর সঙ্গে সমঝোতা করেন। জমির সাফ কবলা দলিল রেজিষ্ট্রী দিবেন মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন। এ ঘটনায় সাক্ষী হলেন- মোঃ সাদিকুল ইসলাম, এম.এ গফুর, মোস্তফা খান, এমদাদ হোসেন। বাদী আসামির প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা রেখে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু আসামি এবারও বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন। এরপর ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে আসামির সঙ্গে আপোষ বৈঠক হয়, কিন্তু আসামি বাদীকে জমির সাফ কবলা দলিল রেজিষ্ট্রী করে দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি। উল্টো আসামি জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিবেন, টাকা দিবেন না বলে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকিসহ নানা ধরণের ভয়ভীতি দেখান। এমতাবস্থায় বাদী তার আইনজীবীর মাধ্যমে গত ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে আসামিকে পরবর্তী ০৭ দিনের মধ্যে জমির মূল্য বাবদ পরিশোধকৃত ৫৫ লাখ টাকা ফেরত অথবা জমির সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রী করে দেয়ার অনুরোধী করেন। অন্যথায় বাদী, আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারী ও দেওয়ানী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন মর্মে সতর্ক করা হয়। এতেও কোনো কাজ হয়নি। সর্বশেষ উপায় না পেয়ে, আসামি বাদীর সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে জমির সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রী করে না দিয়ে ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাত করে দন্ডবিধির ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে মর্মে আসামির নিকট থেকে আপোষে টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবে মামলা করেন বাদী। মামলায় ৩১ আগস্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD