রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এক মালিকের দুই প্রতিষ্ঠান স্টিচওয়েল ডিজাইন্স লিমিটেড এবং অ্যাপারেল স্টিচ লিমিটেড। পাশেই ন্যাপথলিন এবং আলকাতরা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের কারণেই ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন স্টিচওয়েল ডিজাইন্স এবং অ্যাপারেল স্টিচ লিমিটেডের মালিক।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁও শিল্প অঞ্চল এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন।
ইকবাল হোসেন বলেন, আমার প্রতিবেশী প্রতিষ্ঠান নজরুল অ্যান্ড ব্রাদার্স আলকাতরা, ন্যাপথলিন উৎপাদন করেন। তার উৎপাদিত দুটি পণ্যেরই গন্ধ ব্যাপক। যা আমার প্রতিষ্ঠানে তৈরি করা পণ্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন বায়াররা। বায়াররা আমাদের ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়েছে, আমাদের উৎপাদিত পণ্যে রাসায়নিক পদার্থের গন্ধ এবং এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নজরুল অ্যান্ড ব্রাদার্সকে বারবার অনুরোধ জানাই। কিন্তু ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের দ্বারস্থ হই। অসংখ্য লিখিত অভিযোগ পরিবেশ অধিদপ্তর এ জমা দিই কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারাও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিজিএমইএর মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তর নজরুল অ্যান্ড ব্রাদার্সের আলকাতরা ন্যাপথলিন ফ্যাক্টরির ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়। তারপরেও অজানা কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, অনুনয় বিনয় করেছি কিন্তু কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান আমার অভিযোগের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ সময়ের মধ্যে আমার সব বায়ার তাদের সমস্ত অর্ডার বাতিল করে দেয়।
শুধু তাই নয় অনেক বায়ার আমার শিপমেন্টকৃত পণ্যের ওপর মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্লেম করে এবং আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হই। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমি ২০২০ সালের ১০ মার্চ ৪৫ কোটি টাকা ঋণ মাথায় রেখে ১৩ কোটি টাকা পুনঃ ঋণ করে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শ্রমিকদের দেনা পাওনা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করি।
ইকবাল হোসেন বলেন, আমি গত ৩ বছর ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক ঋণে ও সুদের মোটা অঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে করতে নিঃস্ব হয়ে গেছি। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় আমি আমার সহধর্মিণী, এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের নামে ডিও এইচ এস এ অবস্থিত বাড়িটিও ব্যাংকে বন্ধক রেখেছি। আপনারা পরিদর্শন করেন, যাচাই বাছাই করেন এবং আমি যাতে কমপ্লায়েন্স, শ্রম আইন মেনে আবারও ২৫০০ শ্রমিকের রিজিকের ব্যবস্থা করতে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারি সে জন্য আমি সবার কাছে সহযোগিতা চাই।