বিশ্ব ফুটবলে প্রায় সব দেশে খেলোয়াড় তৈরি করে থাকে ক্লাব। কিন্তু বাংলাদেশে চলে ঠিক তার উল্টো রথের যাত্রা। দেশে আবাহনী, মোহামেডানসহ অনেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব থাকলেও ফুটবলার তৈরির জন্য জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তবে এবার নিজেরাই খেলোয়াড় তৈরি করে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাফুফের এলিট একাডেমির ১০ ফুটবলারকে নিয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহাসিক নিলাম। এতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট ও হকির পর নিলামের নতুন যুগে প্রবেশ করল দেশের ফুটবল।
এবারের নিলামে সর্বোচ্চ খেলোয়াড় দলে নিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তারা ৬ জন ফুটবলারকে দলে ভিড়িয়েছে। এ ছাড়া একজন করে খেলোয়াড় কিনেছে বসুন্ধরা কিংস, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, আবাহনী এবং ফর্টিস এফসি। তবে নিলামে কোনো খেলোয়াড় কিনতে পারেনি পুলিশ এফসি ও ঢাকা মোহামেডান।
আজকের নিলামের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ছিল চন্দন রায়ের নাম। এ ক্যাটাগড়ির খেলোয়াড় হওয়ায় তার ভিত্তিমূল্য ছিল পাঁচ লাখ টাকা। তাকে দর হাঁকিয়ে ৯ লাখ টাকায় দলে নেয় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।
নিলামে সর্বোচ্চ ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকায় গোলরক্ষক মো. আসিফকে দলে নেয় বসুন্ধরা কিংস। তাকে নিতে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি এবং আবাহনী লিমিটেডও দাম হাঁকায়। তবে সবাইকে পেছনে ফেলে আসিফকে কিনে নেয় লিগের টানা চারবারের শিরোপাধারী ক্লাব বসুন্ধরা কিংস।
দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে নাম আসে মো. রুবেল শেখের। তবে প্রথম ডাকে অবিক্রিত থেকে যান তিনি। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকা এই ফুটবলারের ভিত্তিমূল্য ছিল ৪ লাখ। প্রথম ডাকে অবিক্রিত থাকলেও, নিলাম শেষে দ্বিতীয় ধাপে আবারও উঠানো হয় তাকে। দ্বিতীয় ধাপে তাকে ভিত্তিমূল্য ৪ লাখেই দলে নেয় ব্রাদার্স।
এছাড়া ফরোয়ার্ড আসাদুল মোল্লাকে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় দলে নিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। সেন্টারব্যাক ইমরান খানকে ভিত্তিমূল্য ৪ লাখ টাকায় দলে নিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকায় সাজেদ হাসান জুম্মনকে দলে নেয় ফর্টিস এফসি। ৪ লাখ করে শ্রী সুমন সোরেন, সিরাজুল ইসলাম রানাকে দলে নেয় ব্রাদার্স।
আজকের নিলামের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন মিরাজুল ইসলাম। ইতোমধ্যেই ইউরোপের ক্লাবে খেলার ডাক পেয়েছেন তিনি। ফলে তার সঙ্গে চুক্তি করলে লম্বা সময় তাকে দলে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তারপরও ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় তাকে দলে নিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
নিলামে খেলোয়াড়দের দাম:
চন্দন রায়- পজিশন মিডফিল্ডার (ভিত্তিমূল্য ৫ লাখ) – ৯ লাখ টাকায় শেখ রাসেলে
রুবেল শেখ – পজিশন ডিফেন্ডার (ভিত্তিমূল্য ৪ লাখ) – ৪ লাখ টাকায় ব্রাদার্স ইউনিয়নে
আসাদুল মোল্লা – অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার (ভিত্তিমূল্য৫ লাখ) – ৭লাখ ৭৫ হাজার টাকায় আবাহনীতে
ইমরান খান – পজিশন ডিফেন্ডার (ভিত্তিমূল্য ৪ লাখ) – ৪ লাখ টাকায় ব্রাদার্সে
সাজেদ হাসান জুম্মন – পজিশন মিডফিল্ড (ভিত্তিমূল্য ৫ লাখ) – ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ফর্টিস
আজিজুল হক অনন্ত – পজিশন লেফট ব্যাক (ভিত্তিমূল্য ৫ লাখ) – ১০ লাখ টাকায় ব্রাদার্সে
সুমন সরেন- পজিশন ফরোয়ার্ড (ভিত্তিমূল্য ৪ লাখ) – ৪ লাখ টাকায় ব্রাদার্সে
মো. আসিফ – পজিশন গোলরক্ষক ( ভিত্তিমূল্য ৫ লাখ) – ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বসুন্ধরা কিংসে
সিরাজুল ইসলাম রানা – পজিশন লেফট ব্যাক (ভিত্তিমূল্য ৪ লাখ) – ৪ লাখ টাকায় ব্রাদার্সে
মিরাজুল ইসলাম – পজিশন ফরোয়ার্ড (ভিত্তিমূল্য ৫ লাখ) – ৬ লাখ ৫০ হাজারে ব্রাদার্সে।