বৃষ্টির হওয়ার একদিন পরও ডুবে ছিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। এই জলাবদ্ধতার বিষয়ে দায় না নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সে দিন টানা ৬ ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তাই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে।
তিনি বলেন, খালগুলো আমরা ভরাট করে ফেলছি, দখল করছি। এছাড়া যেখানে-সেখানে পলিথিন, বোতল, আবর্জনা ফেলছি। যেগুলো গিয়ে ড্রেনে পড়ছে, সেগুলো পানি নামা বাধাগ্রস্ত করছে। পানি প্রবাহ নষ্ট হয়ে, যেতে না পেরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই পানি নেমে যেতে সময় লাগছে, সেই সময় তো দিতে হবে।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মেয়র। এ দিন ‘আগামীর অনুপ্রেরণা’ শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আর্ট ক্যাম্পেইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএনসিসি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, একসময় শেওড়াপাড়া, মধুবাগ, খেজুরবাগান, সংসদ ভবনের পাশের রাস্তা, নেভির সামনের রাস্তা ডুবে যেত। এখন কিন্তু সেই পরিস্থিতি নেই। জলাবদ্ধতা হয়, আবার পানি নেমে যায়। ঢাকা শহরের অলিগলি ২০ ফুটের কম হলে আমরা রাস্তা জন্য বরাদ্দ দেব না। এটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ ২০ ফুটের কম রাস্তা হলে সেখানে ড্রেন করার জায়গা থাকে না। এখনো অনেক রাস্তা আছে যেগুলো ২০ ফুটের কম। সেগুলোতেই মূলত জলাবদ্ধতার সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন জায়গায় বোতল, পলিথিন, নানা আবর্জনা আমরা ইচ্ছে মতো যেখানে-সেখানে ফেলছি। সেগুলো গিয়ে ড্রেনের মধ্যে ঢুকছে, সেগুলোই পানি নামতে সমস্যা করছে। তাই জলাবদ্ধতা কমে যেতে বা পানি সরে যেতে কিছুটা সময় লাগছে।
তিনি বলেন, আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ১০টি র্যাপিড অ্যাকশন টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে এবং জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। আমরা কিন্তু বসে নেই। আমরা, কাউন্সিলররাসহ সংশ্লিষ্টরা মিলে সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমাদের এখন চ্যালেঞ্জ হলো রাস্তাগুলো ২০ ফুট করতে হবে। আর অলিগলিতে যেসব ড্রেন আছে সেগুলো আমরা বড় করার কাজ শুরু করেছি, যাতে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারে। দক্ষিণখান এবং আজমপুরে আমরা এ কাজগুলো ইতোমধ্যে শুরু করেছি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর থেকে শেওড়াপাড়ার দিকে যে রাস্তা, এটাতে আগে জলাবদ্ধতা হলে দুই-তিন দিন যাবৎ জলাবদ্ধতা থাকত। আমরা কিছু কাজ করার ফলে এখন কিন্তু সেখানে ওইরকম জলাবদ্ধতা থাকে না। সব ড্রেনের ডায়ামিটার কিন্তু এক না, অলিগলিতে একটু ছোট লাইন, সেখান থেকে পানি আসবে বড় লাইনে, এরপর সেখান থেকে পানি খালে নামবে। সেহেতু পানি সরে যেতে কিছুটা সময় দিতে হবে।
মেয়র বলেন, কল্যাণপুরে ১৩০ একর জায়গার ওপরে ওয়াটার রিটেনশন পন্ড ছিল, যেখানে বৃষ্টির পানি গিয়ে জমা হতো। সেখানে ইতোমধ্যে একটি সরকারি সংস্থা ৪০ বিঘা জমি বালি দিয়ে ভরাট করেছে। তাহলে রাজধানীর যে জলাবদ্ধতা, যে পানি জমে থাকে সেই পানি কোথায় গিয়ে নামবে? আমাদের সবার মনে রাখতে হবে আমরা যেন পরিবেশটা নষ্ট না করি। পরিবেশ নষ্ট করলে পরিবেশ নিজেই এক সময় প্রতিশোধ নেবে। জলাবদ্ধতাসহ এমন নানা সমস্যার সম্মুখীন আমাদের হতে হবে।