বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির সমর্থনে ফেনীতে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে মহিপাল এলাকায় অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (দুপুর দেড়টা) বিক্ষোভ করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। সড়ক অবরোধ করায় বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত’, ‘এক, দুই, তিন, চার-খুনি হাসিনা গদি ছাড়’, ‘এই বাংলায় হবে না, বৈষম্যের ঠিকানা’, ‘জ্বালােরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়’, ‘বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা গেছে।
সিয়াম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এখন আমি ঘরের বাইরে গেলে আবার ফিরে আসব কিনা তা নিয়ে মা-বাবা চিন্তায় থাকে। সন্তানদের বাসার বারান্দা বা ছাদে পর্যন্ত নিতে পারছে না। একটি স্বাধীন দেশে কীভাবে এসব হতে পারে একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন। এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই।
আরাফাত সানি নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সরকার পতনের মতো দাবি আমাদের কখনোই ছিল না। শুধু শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে কোটা সংস্কার চেয়েছি। কিন্তু সেখানে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তারা। আমাদের এখন এক দফা, এক দাবি। সরকারের পতন নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
এদিকে একদফার আন্দোলনকে ঘিরে শহরজুড়ে পুলিশ ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে শহরের ট্রাংক রোড, জেল রোড ও পৌরসভা সংলগ্নে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের অবস্থান দেখা গেছে।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আন্দোলনকারীরা মহিপালে অবস্থান নিয়েছেন। তবে ট্রাংক রোডের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৩ আগস্ট) সরকার পতনের একদফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর আগে, রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাকও দেওয়া হয়েছে।