বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত বিলের কারণে গত তিন দিন ধরে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ মানুষ। আর এই বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিতে পারে— এমন আশঙ্কা থেকে রোববার (২৭ আগস্ট) রাজধানী ইসলামাবাদে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার।
জাতীয় পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির পর সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন শহরে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ও বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন অনেকে। এর জেরে জরুরি বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী।
পাক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, রোববারের এ বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য শুনবেন তত্ত্ববধায়ক প্রধানমন্ত্রী কাকার। এ ব্যাপারে গ্রাহকরা যেন ‘সর্বোচ্চ পরিত্রাণ পেতে পারেন’ সে বিষয়টি নিশ্চিতের চেষ্টা করবেন তিনি।
আরও পড়ুন>>> ইমরানের কারাদণ্ডের রায়ে গুরুতর ত্রুটি ছিল: সুপ্রিম কোর্ট
এরমধ্যে দেশটির বর্তমান সরকার পরিকল্পনা করছে, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডিসকো এবং গ্রেড-১৭ ও এর উপরের গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তারা যে ভর্তুকিযুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়ে থাকেন সেটি বাতিল করে দেওয়া হবে।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডন আরও জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুরতাজা সোলাঙ্গি গতকাল শনিবার বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মাহমুদ লাঙরিয়ালের সঙ্গে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তথ্যমন্ত্রী মুরতাজা সোলাঙ্গি নিশ্চিত করেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডিসকোর কর্মকর্তারা বিনামূল্যে যে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকেন, সেটি বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং ‘গ্রেড-১৭ এবং তার উপরের গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তাদের বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার বিষয়টি বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রীসভার পরবর্তী বৈঠকে তোলা হবে।’
মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে, যেসব গ্রাহক প্রতিমাসে ৪০০ বা তার বেশি ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তাদের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে। তবে বাসা-বাড়িতে যেসব লাইন আছে সেগুলোর প্রায় ৬১ শতাংশ গ্রাহকের ওপর বাড়তি কোনো চাপ পড়েনি।
তবে বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় রাজনৈতিক দলগুলো বিদ্যুতের দাম সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলেই রাতারাতি দাম কমাতে পারবে না। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল যেসব শর্তে পাকিস্তানকে ঋণ দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ছিল— বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বন্ধ করতে হবে।
সূত্র: দ্য ডন