শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

ছয় মাসে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স আগস্টে

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৩৬ pm

সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে কমেছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। গেল মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ও ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। দেশের প্রবাসী আয়ের এ অংক গত ছয় মাসে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে খোলা বাজারে যখন ডলারের দামের ব্যবধান বেশে হয় তখন হুন্ডি বেড়ে যায়। আর যখন হুন্ডির চাহিদা বাড়ে তখন রেমিট্যান্স কমে যায়। গত মাসে ব্যাংকের চেয়ে খোলা বাজারে ডলারের দাম ৫ থেকে ৬ বেশি ছিল। তাই বেশি লাভের আশায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, সদ্যবিদায়ী আগস্টে মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এ অংক আগের বছরের আগস্টের তুলনায় ৪৩ কোটি ৭৪ লাখ বা ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। গত বছরের আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

এছাড়া আগের মাস জুলাইয়ে তুলনায়ও আগস্টে প্রবাসী আয় কমেছে। গত জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। অর্থাৎ জুলাইয়ের চেয়ে আগস্টে ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ১৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমেছে।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

আগস্টে মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বরাবরের মতো ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। আলোচিত সময় ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ৩৪ কোটি ডলার। এরপর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ১২ কোটি ৭৪ লাখ, ব্র্যাক ব্যাংকে ৮ কোটি ৯২ লাখ, আল-আরাফা ব্যাংকে এসেছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ এবং জনতা ব্যাংকে এসেছে ৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার প্রবাসী আয়।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৬ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল। যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

ডলার সংকট ও বাজার স্থিতিশীলতার জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে ব্যাংকগুলো। এখন প্রবাসী আয়ে ব্যাংকগুলো প্রতি ডলারে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দাম দিচ্ছে। রপ্তানি বিল নগদায়নে প্রতি ডলারের বিপরীতে দাম দিচ্ছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং আমদানি ও আন্তঃব্যাংক লেনদেনে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা।

প্রকৃত রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থার (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক নিয়মে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৩৩০ কোটি (২৩ দশমিক ৩০ বিলিয়ন) ডলার।

সবশেষ ২৬ জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের রিজার্ভ আছে ২ হাজার ৯২০ কোটি ডলার (২৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন) ডলার। তবে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী- আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রকৃত রিজার্ভে ৬১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই প্রকৃত রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে। প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে ৪ মাসের কম আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

সারা বিশ্বে প্রচলিত ও বহুলব্যবহৃত আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) অনুযায়ী, রিজার্ভ গণনায় বাংলাদেশ ব্যাংক গঠিত বিভিন্ন তহবিলের পাশাপাশি বিমানের জন্য প্রদত্ত ঋণ গ্যারান্টি, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মুদ্রা বিনিময়, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া ঋণ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকে আমানত এবং নির্দিষ্ট গ্রেডের নিচে থাকা সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত নয়। এসব খাতে বর্তমানে রিজার্ভ থেকে ৬৩৭ কোটি ডলার দেওয়া আছে, যা বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD