মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মিলন চন্দ্র হালদার(৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাতে উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাদের আকনের ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
কালকিনি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মিলন চন্দ্র হালদার পিরোজপুরের কাউক্ষলা উপজেলার হরিন ধারা গ্রামের অমূল্য চন্দ্র হালদারের ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাদের আকনের ঘাট এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদীতে নাহিদুল খান নামে একজন ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে সারাদিন কাজ করে বিকেলের দিকে ফেরেন। এরপর তার ট্রলারটি নদীর পারে ঠিকঠাক মতো বাঁশের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে বাড়িতে যান। ট্রলারের মালিক রাত ১০টার দিকে এসে দেখেন ট্রলার ঠিক আছে। রাত আড়াইটার দিকে ৪-৫ জনের একদল চোর ট্রলারের রশি কাটছিল। এ সময় স্থানীয় এক লোক প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নদীর পাড়ে আসেন। ট্রলারের রশি কাটার বিষয়টি টের পেয়ে তিনি চিৎকার করলে চোরের দল তার ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পরে চার চোর দৌড়ে পালিয়ে গেলেও মিলন চন্দ্র হালদার নদীর পানিতে পড়ে যান। তাকে পানি থেকে তুলে এনে বাড়ির পাশে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। পরে স্থানীয়রা মিলনকে গণপিটুনি দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সালাম সরদার বলেন, রাতে মিলন নামে এক চোর ট্রলার চুরি করতে এসে গণপিটুনির শিকার হয়। পরে সে মারা গেছে।
ট্রলারের মালিক নাহিদুল ইসলাম খান বলেন, আমি ট্রলার দিয়ে সারাদিন কাজ করে সন্ধ্যার দিকে নদীর পাড়ে বেঁধে বাড়িতে চলে আসি। পরে রাত ১০টার দিকে এসে দেখি ট্রলার ঠিক আছে। এর কয়েক ঘণ্টা পর একজনের চিৎকারশুনে নদীর পাড়ে এসে দেখি আমার ট্রলার চুরি করতে এসেছে। পরে এক চোরকে ধরে স্থানীয়রা মারধর করে পুলিশে খবর দেন। সকালে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেই চোর মারা গেছে কি না আমারা জানি না।
ওসি নাজমুল ইসলাম বলেন, নাহিদুল খানসহ স্থানীয়রা চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ায় মিলন নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও তা কোথা থেকে আসলো কীভাবে আসলো তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।