বরগুনার বেতাগীতে চা ব্যবসায়ী মো. রাসেলের (৩৫) শরীরে চায়ের কেটলি থেকে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিয়েছেন ইউপি সদস্য মো. সিদ্দিকুর রহমান। শুক্রবার রাত ৯টায় উপজেলার খাঁনেরহাট বাজারে ঘটনাটি ঘটে।
মো. সিদ্দিকুর রহমান বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
দগ্ধ শরীর নিয়ে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন চা ব্যবসায়ী মো. রাসেল ৩৫। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এর সত্যতা পেয়েছেন এমনটাই জানান বেতাগী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক করুণ চন্দ্র বিশ্বাস।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে খাঁনেরহাট বাজারে অবস্থিত চায়ের দোকানে বসে এলাকার কয়েকজন লোক সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সম্পর্কে সমালোচনা করেন। তারা (এলাকার লোকজন) বলেন ইউপি সদস্য সিদ্দিক জন্ম নিবন্ধন সংশোধন বাবদ ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন।
এমন আলোচনায় চা-ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, এসব আলোচনা করলে দোকানের বাহিরে গিয়ে করেন। তখন দুলাল ডাক্তার নামের এক ব্যক্তি চা ব্যবসায়ী রাসেলের সঙ্গে তর্ক করেন এবং ইউপি সদস্যকে ডেকে এনে বলেন- চা ব্যবসায়ী তোমার (ইউপি সদস্য সিদ্দিক) সম্পর্কে লোকজনের সঙ্গে সমালোচনা করেন।
এরপর ইউপি সদস্য চা ব্যবসায়ী রাসেলকে বাহিরে ডাকেন কিন্তু দোকান থেকে বের না হলে ওই ইউপি সদস্য ও তার কাছের লোক দুলাল ডাক্তার দোকানের মধ্যে ঢুকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানে থাকা চায়ের কেটলির ফুটন্ত গরম পানি ওই চা ব্যবসায়ী রাসেলের শরীরে ঢেলে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন বলেন, এত পাশবিক নির্যাতন আমি আর দেখি নাই। কোনো কারণ ছাড়াই রাসেলের শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন। এর সঠিক বিচার হওয়া দরকার।
চা ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, আজ গরিব বলে এতটা নির্যাতিত হয়েছি। বিচারটা সৃষ্টিকর্তার কাছেই দিলাম। একজন জনপ্রতিনিধির যদি এমন আচরণ হয় তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়।
ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ও একটা বেয়াদব, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম মাত্র শুধু হাতাহাতি হয়েছে। কোনো গরম পানি আমি শরীরে দেইনি। সম্পূর্ণ অভিযোগই মিথ্যা।
হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.খলিলুর রহমান খান বলেন, একজন চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের নিরাপত্তা দেয়া আমার দায়িত্ব। খবরটি শুনে আমি বেতাগী থানায় জানাই ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেতাগী থানার ওসি মো.শাহ আলম হাওলাদার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্যাতন করে কেউ পার পাবে না।