ভোলা প্রতিনিধি : আগামী ২৯ ডিসেম্বর ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এই ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রতিপক্ষের ওপর বলপ্রয়োগের অভিযোগ এনেছেন মোটর সাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী ইকবাল হোসেন লিখন। তার কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগে ইকবাল হোসেন লিখন জানান, গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তার বাড়ির দরজায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরার উপর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. আলমগীর হাওলাদারের কর্মীরা তাদের পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় কাশেম মিয়ার বাজারের মোটর সাইকেল প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ও ইমাম মেহেদী হালটে স্থাপিত নির্বাচনী অফিস ২টি বন্ধ করে দিয়েছে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর কর্মীরা। একইদিন রাত ১০টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকেরা স্বতস্ত্র প্রার্থীর বাড়ির দরজায় থাকা নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন লিখন চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল মতিন খান এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রফিকুল ইসলামকে লিখিতভাবে ঘটনাগুলো জানিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, বিষয়গুলো তিনি শুনেছেন, যে প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাকে শোকজ করা বা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইবে নির্বাচন কর্মকর্তা। আজ (১৩ ডিসেম্বর) সকালেও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে তিনি এ বিষয়ে বলেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কী না চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- অবশ্যই পদক্ষেপ নিচ্ছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানা ওসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে কথা বলারও পরামর্শ দেন রফিকুল ইসলাম।
এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, এখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে পুলিশ রয়েছেন, আচরণ বিধি লঙ্ঘন হয়ে বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেখবেন, আমি হচ্ছে রেফারি। একজন প্রার্থী নির্বাচনী অফিস প্রতিপক্ষ বন্ধ করে দিলে বিষয়টি কে দেখবে প্রশ্ন করা হলে নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া আছে। পুলিশ আছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আছে তারা দেখবে, আমিও দেখবো। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এ বিষয়ে দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদেরকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন অফিস থেকে কিছুই জানানো হয়নি, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে অভিযোগটি পেয়েছি, আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখবো। তবে আচরণ বিধি লঙ্ঘিত হয়ে সেটি নির্বাচন অফিস দেখবে। এ বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. আলমগীর হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, একই দিন চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ও আমিনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদেও ভোট অনুষ্ঠিত হবে।