কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ ও লাভজনক করতে চাই। কৃষি হবে উন্নত জীবনের জন্য। একজন কৃষক যাতে কৃষি কাজ করে তার সন্তানসহ পরিবারকে উন্নত জীবনযাপন করাতে পারে সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। তাই, দিনাজপুরের সম্ভাবনাকে শতভাগ ব্যবহার করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করছে। এর ফলে কৃষি কাজ করে মানুষ অনেক বেশি লাভবান হবে।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিনাজপুরে নশিপুরে বিডব্লিউএম আর আই সেমিনার কক্ষে এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কৃষি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গম ও ভুট্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। এখানকার বিজ্ঞানীদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আগামীতে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট। আর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান একটি বিরাট ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, কৃষিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি আবর্তিত হয়। আমাদের সংস্কৃতি, রাজনীতিসহ সকল কিছুতেই কৃষির বিপুল প্রভাব। বাংলাদেশ ধান প্রধান ফসল। কিন্তু সম্প্রতি আমরা বলছি- ধানের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ফসল উৎপাদন করতে হবে। আর পুষ্টি জাতীয় খাবার খেতে হবে। পুষ্টি জাতীয় খাবার বলতে আমরা বুঝি- দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি। এগুলো উৎপাদন করতে গেলে পশুর মূল খাদ্য হচ্ছে কার্বো হাইড্রেড এবং প্রোটিন। আর কার্বো হাইড্রেডের সবচেয়ে সস্তা উৎস হলো ভুট্টা। দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশে ভুট্টা প্রধান খাদ্য হলেও বাংলাদেশে অনেকে ভুট্টা খায় না। ২০ থেকে ২৫ বছর আগে আমাদের দেশে ভুট্টার কোনো ফসল ছিল না। কিন্তু এখন ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা। সেই চাহিদার কারণ হলো পশু খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সরকার গঠন করে তখন ভুট্টার উৎপাদন ছিল ছয় লাখ টন। চলতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের ফলে এবার ভুট্টার উৎপাদন হয়েছে ৬৭ লাখ টন। যা মূলত দেশের উত্তরবঙ্গে উৎপাদিত হচ্ছে। ধান আমাদের প্রধান খাদ্য হলেও বর্তমানে তরুণরা গমের খাবার বেশি খেতে চায়। সেই সঙ্গে গমের চাহিদা ব্যাপক বাড়ছে।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া প্রমুখ।