নরসিংদীর মনোহরদীতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কালভার্টের মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট করেছে এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল। ফলে সড়কের দুই পাশের প্রায় ৫০ একর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। ঘটনাটি উপজেলার হেতেমদী-সাগরদী বাইপাস সড়কের সাগরদী বাজারের দক্ষিণ পাশে।
জানা যায়, মনোহরদী উপজেলা চালাকচর বাজারে যানজট নিরসনের জন্য বাইপাস সড়কটি ঢাকা-কিশোরগঞ্জের যোগাযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এ সড়কে এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। চলতি বছর মনোহরদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফ দস্তগীর ঐ কালভার্টের মুখের জমি স্থানীয় প্রভাবশালী ১২ জনের নামে লিজ দেন। লিজ প্রাপ্তরা হলেন- ছাত্রলীগ নেতা ছাদ্দাম, রিক্তু, প্রবল মাইনুদ্দিন বাবুলসহ ১২ জন।
পরবর্তীতে তারা কালভার্টের মুখে মাটি ভরাট করে বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করার পাঁয়তারা করছে। এতে এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বক্স কালভার্টর মুখ বন্ধ করে এখানে স্থাপনা নির্মাণ করলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ৫০ একরেরও বেশি কলাবাগান এবং পানের বরজসহ বিভিন্ন রকম চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন কৃষক বলেন, এই কালভার্টটি এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। এটি বন্ধ হয়ে গেলে আগামী বর্ষায় স্থানীয়দের বসতঘরে ও আঙিনায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। এতে করে জনদুর্ভোগ বাড়বে।
এলকে ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ডা. মানস রঞ্জন চক্রবর্তী তরুণ বলেন, দুটি কালভার্টের মুখ বন্ধ করায় বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। কলাবাগানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কালভার্টের মুখের জমি লিজ দেওয়া উচিত হয়নি।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী রাজীব কুমার দাস বলেন, পানি চলাচলের জন্য নির্মিত কালভার্টের মুখ বন্ধ করে মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। আমরা দ্রুতই এগুলো অপসারণের ব্যবস্থা করবো।
এ বিষয়ে মাইনুদ্দিন বাবুল মুঠোফোনে জানান, এলাকার কয়েকজন মিলে টাকা দিয়ে ঐ জমি লিজ নিয়েছেন। তবে কাগজপত্র আমার নামে করা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফ দস্তগীর বলেন, ঐ জমিটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিলো। সেজন্য লিজ দিয়ে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। কালভার্টের মুখে পাইপ বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।
মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাছিবা খান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনটি হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।