সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৯ অপরাহ্ন

‎ওসিকে ফাঁসাতে এসপি বরাবর মিথ্যে অভিযোগ

আরব-বাংলা রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫ ২:১৮ pm

‎‎মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধারের পর সেগুলো ফেরত না দিয়ে উল্টো মামলার বাদীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন ওসি জাহিদুল ইসলাম।

‎তার দাবি, একটি মহল তাকে ফাঁসানোর জন্য সুপরিকল্পিতভাবে এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।

‎জানা যায়, উপজেলার চর আজিমপুরের কাজী শরিফুর রহমানের ভাই কাজী আরিফুর রহমান (৩৫) বাদি হয়ে গত রোববার (১২ জানুয়ারি) ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ।

‎অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,  গত ৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে দশটার দিকে কাজী শরিফুর রহমান বাড়ীতে না থাকার সুযোগে তার স্ত্রী চাঁদনী আক্তার অজ্ঞাত এক যুবকের প্ররোচণা ও সহযোগিতায় বিদেশ থেকে স্বামীর দেয়া ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, কাজী শরিফুর রহমানের ব্যক্তিগত ও তার সহকর্মীদের বাড়িতে পাঠানোর টাকাসহ মোট ৪৫ হাজার রিয়াল ও ব্যবহৃত ২টি স্মার্টফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।

‎এবিষয়ে চাঁদনী জানান, তিনি কোন স্বর্ণালংকার বা বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে পালাননি। সাভার থেকে তাকে পুলিশ উদ্ধারের সময় তার কাছে মাত্র ১৬হাজার টাকা, দুইটা কানের দুল, একটা আংটি ও পায়ের নূপুর ও তার ব্যবহৃত মোবাইলটি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। তার স্বামী বিদেশ থাকায় স্বামীর বড় ভাই তাকে মাঝে মাঝে কুপ্রস্তাব দিতেন। এবিষয়ে ফোনে স্বামীকে জানালে তিনি বড় ভাইয়ের কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

‎চাঁদনীর পরিবারের অভিযোগ তাদের মেয়েকে ফাঁসাতে মিথ্যা চুরির অভিযোগ তুলছে স্বামীর পরিবার।

‎খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে স্বামী প্রবাসে থাকাকালীন তার সাথে বৈরী সম্পর্ক ছিল স্ত্রী চাঁদনীর, স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকায় বাবার বাড়িতেই থাকতেন চাঁদনী। কিছুদিন আগে বিদেশ থেকে ফিরলে স্বামীর বাড়িতে গেলেও সম্পর্ক ঠিক হয় না। পরে চাঁদনীর পরিবার তাকে তাদের বাড়িতে ফিরে নিয়ে আসেন।

‎পরবর্তীতে চাঁদনী বাড়ি থেকে কিছু না বলে চলে গেলে চাঁদনীর পরিবার এবং তার শ্বশুর বাড়ির পরিবার উভয় পক্ষই পুলিশের সহযোগিতা নেন তাকে খুঁজে বের করতে। পরে পুলিশ তাকে সাভার থানার একটি গ্রাম থেকে উদ্ধার করেন। তাকে উদ্ধারের সময় সিংগাইর থানার পরিদর্শক মোশারফ হোসেন, এস আই আব্দুল মুত্তালিব, চাঁদনীর স্বামী কাজী শরিফুল ইসলাম ও স্থানীয় নেতা নজরুল ইসলাম ছিলেন। সেই রাতে উদ্ধার করে তাকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। পরের দিন বিকেলে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জাহিদুল ইসলামের অফিসে কক্ষের উভয় পক্ষের পরিবার এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা আসেন। তবে বিষয়টি মামলা নেওয়ার জন্য যথাযথ তথ্য প্রমান না থাকায় ওসি জাহিদুল ইসলাম চাঁদনীকে তার বাবার জিম্মায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

‎ঘটনার কয়েকদিন পর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জাহিদুল ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ এসপি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন চাঁদনীর স্বামীর পরিবার। তবে লিখিত অভিযোগের কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

‎এ বিষয়ে চাঁদনীর স্বামী ইসলাম জানান, তার স্ত্রী চাঁদনীর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করতে চান, সিংগাইর থানা মামলাটি গ্রহণ করেননি। তার ধারণা সিংগাইর থানার ওসির নির্দেশেই চাঁদনীর কাছে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং স্বর্ণালংকার ওসি জাহিদুল ইসলাম মেরে দিয়েছেন। তাই তার বড় ভাই ওসি জাহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

‎আপনার স্ত্রীকে যখন সাভার থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়, তখন সাথে ছিল এসআই আব্দুল মুত্তালিব এবং পুলিশ পরিদর্শক মোশারফ হোসেন এবং বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না দিয়ে আপনি ওসি সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন দিলেন? এমন প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেননি স্বামী শরিফুল ইসলাম।

‎অভিযোগের বিষয়ে ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, বাদিকে কোনো দুষ্ট চক্র ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন। তার অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।

‎তিনি বলেন, এ থানায় যোগদানের পরেই চুরি-ডাকাতি রোধ, বিভিন্ন অপরাধ ও সামাজিক বিভিন্ন কাজকর্ম যেমন নাগরিক কমিটি, সভা-সেমিনার এবং প্রত্যেক ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন পয়েন্টে স্থানীয়দের নিয়ে মত বিনিময় সভা পরিচালনার মাধ্যমে জনগনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ সেটা তুলে ধরে ছোট বড় অপরাধ দমনে সফল হয়েছি।

‎তিনি আরো বলেন, আমি থাকতে এ থানায় দালালি চলবেনা, সম্প্রতি এ কথা ছড়িয়ে পড়লে দালাল শ্রেণীর টাউট-বাটপারদের চোখের বালিতে পরিণত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কাজী আরিফুর রহমানের এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সবই দালালদের মনগড়া মন্তব্য। আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একদল কু-চক্র মহল তাদের স্বার্থ হাছিল না হওয়াতে আমার বিরুদ্ধে এ মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। আমি অপরাধী দালাল চক্রের নিধন করে ছাড়ব ইনশাহ্ আল্লাহ্ ।

‎এবিষয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন জানান, অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

শেয়ার করুন

আরো
© All rights reserved © arabbanglatv

Developer Design Host BD