নিজেরা দিতে রাজি নয়। তবে, ন্যাটোর কোনও সদস্য দেশ যদি ইউক্রেনকে আধুনিক লেপার্ড ট্যাঙ্ক দেয় তাতে আপত্তি করবে না জার্মানি। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবাখ সোমবার এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পোল্যান্ড যদি ইউক্রেনকে লেপার্ড ট্যাঙ্ক দিতে চায়, তবে আমরা বাধা সৃষ্টি করব না।’
গত শুক্রবার আমেরিকা তাদের সেরা সাঁজোয়া গাড়ি স্ট্রাইকার ইউক্রেনকে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা এবং ইউরোপের একাধিক দেশের অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের তৈরি লেপার্ড ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে পাঠাতে রাজি হয়নি জার্মানি। সামরিক এবং কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে রাশিয়ার রোষাণলে পড়ার ভয়েই বার্লিনের এই সাবধানী নীতি। তাদের মতে যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও রাশিয়ায় গ্যাসের ওপর জার্মানির নির্ভরতা রয়েছে যথেষ্টই। তাই ন্যাটোর সদস্য দেশ হয়েও ইউক্রেনকে লেপার্ড সরবরাহে এখনও সম্মত হয়নি তারা।
ইউরোপজুড়ে ন্যাটো বাহিনীতে বিপুলসংখ্যক লেপার্ড রয়েছে। পোল্যান্ড-সহ কয়েকটি দেশ তাদের ব্যবহৃত ট্যাঙ্ক ইউক্রেনকে দিতে চেয়েছে বলে কয়েকটি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের খবর। সেই প্রেক্ষিতে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউক্রেন সেনার জন্য এই ট্যাঙ্ক উপযুক্ত হত বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। লেপার্ড হাতে পেলে ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনীর পক্ষে রুশ টি-৯০ ট্যাঙ্কের মোকাবিলা করা সহজ হবে। লেপার্ডের ১২০ মিলিমিটারের দূরপাল্লার এল-৩০ কামান বিধ্বংসী হামলা চালাতে পারে রুশ সেনার ওপর। পাশাপাশি, এই ট্যাঙ্কের এল৩৭এ২ বিমান বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় কামান (অটোক্যানন) রুশ ড্রোন হামলারও মোকাবিলা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের জন্য ২৫০ কোটি ডলারের (প্রায় ২০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা) সামরিক সাহায্য ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই তালিকায় রয়েছে ৯০টি স্ট্রাইকার সাঁজোয়া গাড়ি। মূলত রুশ গোলা ও বোমাবর্ষণ এড়িয়ে নিরাপদে যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের পাঠাতে কাজে লাগে এই সামরিক যান।
পাশাপাশি, শত্রুর ওপর আক্রমণেও এই সাঁজোয়া যান দক্ষ। এই প্রথম ইউক্রেন সেনাকে স্ট্রাইকার দিচ্ছে ওয়াশিংটন। বাইডেন সরকারের এই সিদ্ধান্তে পূর্বের রণাঙ্গনে রুশ সেনার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পোল্যান্ডের থেকে লেপার্ড পেলে বর্ষপূর্তির আগেই ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।