নানা সংকটে কয়েক দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও অবশেষে খুলে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। আজ পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে এ জন্য সবরকমের প্রস্তুতি নিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড প্রকৌশলী রিপন শেখ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। পুরো অংশেই বসানো হয়েছে রেললাইন। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের কাজও শেষ পর্যায়ে। স্বল্প দূরত্বের এই রেলপথ আগরতলার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব কমাবে প্রায় ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার। দু’দেশের যোগাযোগের পাশাপাশি ভূমিকা রাখবে ব্যবসা-বাণিজ্যে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। এদিকে রেলপথ দ্রুত চালুর খবরকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে যেন আগ্রহের শেষ নেই।
এদিকে দীর্ঘ পাঁচ বছরের বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে উদ্বোধনের দ্বারপ্রান্তে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। বুধবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় সফলভাবে ট্র্যাক কার চালানোর পর এখন চলছে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের প্রস্তুতি।
এলাকাবাসীর দাবি, এই রেল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যেন এলাকাবাসীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
প্রকৌশলী রিপন শেখ জানান, মঙ্গলবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। এ কারণে সবরকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ রেলপথ চালু হলে যোগাযোগের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে এই রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দু’দেশের ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরও জানান, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের বাংলাদেশ অংশে সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেললিংকিং তৈরি হয়ে গেছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্পটির শুরু থেকে আমি রয়েছি। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যে সাটি অঙ্গ রাজ্য রয়েছে, তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কলকাতার যোগাযোগের জন্য প্রায় সাড়ে ১৪০০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এ রেলপথটি হয়ে গেলে ত্রিপুরা থেকে কলকাতায় যাত্রাপথ অন্তত সাড়ে ৯০০ কিলোমিটার কমে যাবে। সেই সঙ্গে ভারতের সাতটি অঙ্গরাজ্য যুক্ত হলে চট্টগ্রাম বন্দর ও মাতারবাড়ী বন্দরের সঙ্গে পণ্য আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হবে। এতে দুই দেশেই ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতি ক্ষেত্রে অনেকটাই লাভবান হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের নির্মাণ কাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড প্রকল্পের কাজ করেছে। আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর গিয়ে মিশেছে এই রেলপথ।